যৌন প্রজননের জন্য নিষেক প্রয়োজন। এটি একটি জৈবিক প্রক্রিয়া। যৌন প্রজননে ডিম্বাণু এবং শুক্রাণুর মিলনকে নিষেক বলে। শুক্রাণু সক্রিয়ভাবে ডিম্বাণুতে প্রবেশ করে এবং এদের নিউক্লিয়াস দুটি পরস্পর একীভূত হয়। একীভূত হয়ে যে কোষটি উৎপন্ন হয়, তাকে জাইগোট বলে। নিষেক ক্রিয়া সংঘটিত করার জন্য কিছু সময় লাগে। ডিম্বাণু এবং শুক্রাণু উভয়ই হ্যাপ্লয়েড (n) অর্থাৎ এক প্রস্থ ক্রোমোজোম (Chromosome) বহন করে। জাইগোট ডিপ্লয়েড (2n) বা দুই প্রস্থ ক্রোমোজোমবিশিষ্ট। স্ত্রী ও পুং উভয় জননকোষের পূর্ণতা প্রাপ্তি নিষেকের পূর্বশর্ত।
নিষেক প্রক্রিয়া বিশেষভাবে নির্দিষ্ট। প্রাকৃতিকভাবে একই প্রজাতির পরিণত শুক্রাণু এবং ডিম্বাণুর মধ্যে এটি সংঘটিত হয়। নিষেক সাধারণত অপরিবর্তনশীল। একবার নিষিক্ত হলে ঐ ডিম্বাণুকে পুনরায় নিষিক্ত করা যায় না। নিষেক দুই ধরনের: বহিঃনিষেক (External Fertilization) এবং অন্তঃনিষেক (Internal Fertilization)।
(a) বহিঃনিষেক: যে নিষেক ক্রিয়া প্রাণিদেহের বাইরে সংঘটিত হয় তা বহিঃনিষেক নামে পরিচিত। এ ধরনের নিষেক সাধারণত পানিতে বাস করে এমন সব প্রাণীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ। যেমন:বিভিন্ন ধরনের মাছ, ব্যাঙ প্রভৃতি। তবে এর ব্যতিক্রম রয়েছে, যেমন: হাঙ্গর।
(b) অন্তঃনিষেক: স্ত্রীদেহের জননাঙ্গে সংঘটিত নিষেক অন্তঃনিষেক নামে পরিচিত। সাধারণত শারীরিক মিলনের মাধ্যমে পুরুষ প্রাণী তার শুক্রাণু স্ত্রী জননাঙ্গে প্রবেশ করিয়ে এ ধরনের নিষেক ঘটায়। অন্তঃনিষেক ডাঙায় বসবাসকারী অধিকাংশ প্রাণীর অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
নিষেকের কয়েকটি মৌলিক তাৎপর্য
নিষেক ভ্রুণে ডিপ্লয়েড ক্রোমোজোম সংখ্যাকে পুনঃস্থাপিত করে, ডিম্বাণুকে পরিস্ফুটনের জন্য সক্রিয় করে তোলে, ক্রোমোজোম কর্তৃক বহনকৃত পিতা-মাতার বৈশিষ্ট্যগুলোকে একত্রিত করে ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ করে।
নিচে ব্লকচিত্রের সাহায্যে মানুষের প্রজননের ধাপগুলো দেখানো হলো:
বংশবিস্তার এবং বংশ রক্ষার জন্য প্রজনন প্রক্রিয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। এ প্রক্রিয়ায় মাতৃগর্ভে ভ্রুণের সৃষ্টি হয় এবং সন্তান জন্ম নেয়। মানুষ একলিঙ্গবিশিষ্ট প্রাণী অর্থাৎ প্রজননের জন্য স্ত্রী ও পুরুষে পৃথক পৃথক অঙ্গ বর্তমান।
Read more